কুতুবদিয়ার ধুরুং বাজার ইয়াবা ট্যালেট বেচা-কেনার হাটে পরিণত হয়েছে। প্রকাশ্যেই অবাধ এই মাদক বিস্তার লাভ করায় উঠতি যুবক,বখাটে ছাড়াও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা দ্রুত আসক্ত হয়ে পড়ছে। এমন আশংকার কথা জানালেন বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যবসায়ি জানান,সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই বেকার-বখাটে ৫/৬ জনের একটি সিন্ডেকেট বাজারের জীপ ষ্টেশন থেকে পুরাতন কমিউনিটি সেন্টার,তিন পুলের মাথা,বাজারের উত্তর পশ্চিমে মন্টু সওদাগরের দোকান থেকে রবি টাওয়ার ,সাবেক সিডি হল,বকশালী সিকদার পাড়া যেতে ব্রীজ,নুরার পাড়ার রাস্তার মাথা, দরবার রাস্তার মাথা প্রভৃতি স্থানে প্রকাশ্যেই ইয়াবা ট্যাবলেট কেনা-বেচার ধুম পড়ে যায়। অধিকাংশ বড়ি মোবাইলের মাধ্যমেই বিক্রি হয়ে থাকে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়। উপজেলার বিভিন্ন স্পটে একাধিক বার ইয়াবা পাচারকারি আটক হলেও ধুরুং বাজারে এখন পর্যন্ত কোন অভিযান পরিচালিত না হওয়ায় বে-পরোয়া এ সিন্ডিকেট।
ইয়াবার সাথে পরিচিত একজন ব্যবসায়ি জানান, আর-৭ ও চম্পা নামের দুই জাতের ট্যাবলেট বাজারে বিক্রি হয়। আর-৭ এর দাম প্রতিটি ১৬০ টাকা এবং চম্পার দাম ৬০ টাকা বলে তিনিি জানান। তিনি আরো বলেন এসব বড়ি অন্য জায়গার চেয়ে সস্তায় মেলায় প্রতিনিয়িত ইয়াবা বড়ি সেবনের গ্রাহক বেড়েই চলেছে। স্থানীয় স্কুল-কলেজের ছাত্ররা এতে আসক্ত হয়ে পড়ছে বেশি। অল্প বয়সের শিক্ষার্থীরা ইয়াবা সেবনে ঝুঁকে পড়ায় আতংকিত অভিভাবক মহলও। যা দ্রুত রোধ করা উচিৎ বলে মনে করেন ধুরুং হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোর্শেদুল আলম। নাম প্রকাশ না করা শর্তে একাধিক ব্যবসায়ি জানান, বেকার যুবকরা অনেকেই এই ব্যবসায় নেমেছে। জেলখাটা রমজান,আলম নুর,ঈসমাঈল,রিকসা চালক ওবাদ উল্লাহ,নুর মোহাম্মদ সহ কয়েকজন খুচরা ইয়াবা কেনা-বেচাঁয় জড়িয়ে পড়েছে। এদের কেউ পুরনো গাঁজা .মদ বিক্রিতেও জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে তারা। বাজারের একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ি জানান, কিছু দিন আগে জসীম নামের এক যুবক তার কাছে এক প্যাকেট ইয়াবা বড়ি (মাল) বিক্রির জন্য কাষ্টমার খুজতে এসেছিল।
এ ছাড়া লেমশীখালী চৌমুহনী এলাকার একজন নারী বিক্রেতাও রয়েছে এ পেশায়। সাতকানিয়া উপজেলার বাসিন্দা আরেকজন কালো নারী সিগারেটের ব্যান্ডরোল (পরিশোধিত সুল্ককর) ক্রয়ের আড়ালে ইয়াবা আনা-নেয়া করে থাকে বলে বাজারের একজন খুচরা পান দোকানি জানান। তার স্বামী ইয়াবা পাচারে আটক হয়ে জেলে রয়েছে বলে জানা গেছে।
দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের (ধুরুংবাজার সহ ) মেম্বার মোর্শেদ আলম সিকদার বলেন, বাজারে ইয়াবা বেঁচা-কেনা বেড়ে গেছে বলে তিনি শুনেছেন। এদের তথ্য সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পুলিশকে সহায়তা করবেন বলে জানান। দক্ষিণ ধুরুং ইউপি চেয়ারম্যান ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী বলেন, ধুরুংবাজারে সম্প্রতি ইয়াবা বিক্রি বেড়ে যাওয়ার খবরটি তার নলেজে এসেছে। তিনি পদক্ষেপ নিতে গেলে নির্বাচিনী প্রতিহিংসার বশবতী হয়ে এমনটি করছেন- এমন অযথা নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। যুব সমাজকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষায় এবং বাজারের সুষ্ঠ পরিবেশ বজায়ে পুলিশের জোড়ালো টহল কিংবা অভিযান পরিচালনা করা জরুরী হয়ে পড়েছে বলে তিনি মনে করেন।
থানার অফিসার ইন্চার্জ (ওসি) অং সা থোয়াই বলেন, ইয়াবা বেচাঁ-কেনায় জড়িতদের ধরতে সহায়তা করতে স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বলা হয়েছে। তবে তারা যথা সময়ে সহযোগীতা করছেন না বলেও জানান। ইয়াবা বিক্রির সুনির্দিষ্ট ষ্পট বা তথ্য জানালে পুলিশ দ্রুত অভিযান চালিয়ে জড়িতদের আটক করতে পারবে। তিনি বাজারের ব্যবসায়িদেরকে এ ব্যাপারে সহযোগীতা করার আহবান জানান।
পাঠকের মতামত: